ব্লুম (BLUM), ডগস (Dogs), বিটকয়েন (Bit Coin), ইথারিয়াম (Etherium), লাইটকয়েন (Litecoin) বা (রিপল (Ripple) এর নাম অনেকেই শুনে থাকবেন। আবার অনেকে নাও শুনে থাকতে পারেন। আজকে এদের নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং এয়ারড্রপ থেকে কীভাবে ইনকাম করা যায় এ বিষয়ে বলা হবে।
এয়ারড্রপ কী ( What is Airdrop) :
টেলিগ্রামে এয়ারড্রপ বিষয়টি মূলত ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ডিজিটাল কারেন্সির সাথে সম্পর্কযুক্ত। এখন নতুনদের জন্য আরো একটি প্রশ্ন হচ্ছে
ক্রিপ্টোকারেন্সি কী? : ক্রিপ্টোকারেন্সি মূলত হলো ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা। যা ক্রিপ্টোগ্রাফির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে লেনদেন পরিচালনা করে। সহজ ভাষায়, এই ডিজিটাল মুদ্রা কোন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা কোন দেশের সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। এটি এমন একটি সিস্টেম যা ব্লকচেইন প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে কাজ করে। ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আরো সহজে বুঝানোর জন্য এর কিছু বৈশিষ্ট্য বলা যাক।
ক্রিপ্টোকারেন্সির বৈশিষ্ট্য :
১. এর প্রধান বৈশিষ্ট্যই হলো এটি এর উৎপাদনকারীদের (Miner) দ্বারা পরিচালিত হয়।
২. এটি লেনদেনে কোন ব্যাক্তিগত তথ্য ব্যবহার করতে হয়না। ফলে কোন লেনদেনের কোন চিহ্ন থাকেনা।
৩. ক্রিপটোগ্রাফি ব্যবহারের ফলে এটি হ্যাক করা বা নকল করা যায়না এবং সীমাহীন লেনদেন করা যায়।
উপরের বৈশিষ্ট্য থেকে এটি স্পষ্ট যে এর সীমাহীন সুবিধার ফলে বর্তমানে এটি একটি জনপ্রিয় ডিজিটাল কারেন্সির মাধ্যম।
এখন ফেরত আসা যাক এয়ারড্রপে। টেলিগ্রাম বা অন্যান্য যেকোন প্ল্যাটফর্মে “এয়ারড্রপ” বলতে মূলত বোঝানো হয় যখন কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রোজেক্ট মার্কেটিং করার জন্য সোশ্যাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে টোকেন বা কয়েন পুরস্কার হিসেবে ফ্রিতে ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিতরণ করে। অর্থাৎ একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি লঞ্চ হওয়ার পূর্বে তাদের মার্কেটিং বা পপুলারিটি বৃদ্ধির জন্য তাদের প্রজেক্টে পার্টিসিপেন্টদের জন্য ফ্রিতে ক্রিপ্টো টোকেন বা কয়েনের ব্যবস্থা করা।
এখন প্রশ্ন থাকতে পারে এই টোকেন বা কয়েন দিয়ে কী হবে? ইনকামের সাথে এদের সম্পর্কটাই বা কী? উত্তর হচ্ছে, এই ক্রিপ্টোকারেন্সি লঞ্চ হবার পর তাদের টোকেন বা কয়েন ডলার দিয়ে এক্সচেঞ্জ বা বিনিময় করা যায়। এখন কোথায় কীভাবে এক্সচেঞ্জ করতে হবে তা তাদের প্রজেক্টের কমিউনিটি গ্রুপে দেয়া থাকে। আর টেলিগ্রামে এসব প্রজেক্ট হওয়ার কয়েন এক্সচেঞ্জের এ সকল সুবিধাও সহজ। কোনরুপ ঝামেলা ছাড়াই সহজে যে কেউ তা এক্সচেঞ্জ করতে পারে।
কীভাবে এয়ারড্রপে কাজ করবো :
এয়ারড্রপে কাজ করা একদম সহজ। বাংলাদেশে হাজারো মানুষ এখন টেলিগ্রামে কোন পুজি ও দক্ষতা ছাড়াই এয়ারড্রপে কাজ করে। কিছু কিছু এয়ারড্রপে দিনে ৫-১০ মিনিট সময় দিলেই হয়। আবার কোন কোন এয়ারড্রপে যতো সময় দেয়া যায় ততো ইনকাম হয়। তবে আপনি যতো সময় দিতে পারবেন ততো কয়েন বা টোকেন বৃদ্ধি করতে পারবেন। পরবর্তীতে এসব টোকেন এক্সচেঞ্জ করে ডলারে রুপান্তর করে সহজেই আপনার বিকাশ বা ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করতে পারবেন। অথবা চাইলে অন্য কারো কাছে বিক্রিও করতে পারবেন।
এয়ারড্রপ অনুসারে এদের কাজ ভিন্ন হয়। তবে প্রত্যাক এয়ার ড্রপের কাজ প্রায় একই রকম। তা হলো দিনে নিদিষ্ট কিছু কাজ পূরণ করে টোকেন বাড়ানো। কাজ গুলো হয় আপকামিং ক্রিপটো কারেন্সির ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ইত্যাদিতে গিয়ে যুক্ত হওয়া বা ভিডিও দেয়া। কখনো কখনো কিছু টেলিগ্রাম চ্যানেলে যুক্ত হতে হয়। এদের অধিকাংশ কাজগুলোই সহজ এবং ধরাবাঁধা কোন নিয়ম বা সময় থাকেনা ফলে আপনি আপনার ইচ্ছেমতো যখন খুশি টোকেন বাড়াতে পারেন। পরবর্তীতে এটি ক্রিপ্টোকারেন্সিতে লিস্ট হলে টোকেনের পরিমান অনুসারে পেমেন্ট নিতে পারেন।
তবে এয়ারড্রপের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আপকামিং ট্রাস্টেড এয়ারড্রপ বাছাই। কারণ আপনি একটি এয়ারড্রবে সময় দেয়ার পর সেটি ক্রিপটোকারেন্সিতে লিস্ট না হলে বা পেমেন্ট না দিলে আপনার খাটনি ও সময় উভয় বিফল। তাই নিজ দ্বায়িত্বে দেখে ট্রাস্টেড সাইট থেকে বাছাই করে কাজ করলে মোবাইল দিয়েই একটি ভালো ইনকাম আনা সম্ভব।