নিচের যে অংশটি সম্পর্কে জানতে চান, ক্লিক করুন
- ডায়াবেটিস (Diabetes) কী?
- ডায়াবেটিস (Diabetes) কেন হয়?
- ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ ও উপসর্গ (Early Signs and Symptoms of Diabetes) কি কি?
- ডায়াবেটিসের ধরণ ও উপসর্গ কি কি?
- টাইপ 1 ডায়াবেটিস (Type 1 Diabetes) কী?
- টাইপ 1 ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলো (The symptoms of type 1 diabetes) কি কি?
- টাইপ 2 ডায়াবেটিস (Type 2 Diabetes) কী?
- টাইপ 2 ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলো (The symptoms of type 2 diabetes) কি কি?
- প্রিডায়াবেটিস (Prediabetes) কী?
- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes) কী?
- ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার (Diabetes incidence rate) কেমন?
- ডায়াবেটিস পরিক্ষার ধরণ (Types of Diabetes test) কি কি?
- Fasting blood glucose test কী?
- Random blood glucose test কী?
- A1c (Hemoglobin A1C) test কী?
- ডায়াবেটিস রোগী যে সকল খাবার খাবেন না
- ডায়াবেটিস রোগীদের যে যে খাবার খাওয়া উচিত
- ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায় কী?
- ডায়াবেটিস প্রতিকারের উপায় কী?
ডায়াবেটিস (Diabetes) কী ?
ডায়াবেটিস হলো মানবদেহের একটি বিশেষ অবস্থা যা শরীরে প্রবাহিত রক্তে মাত্রারিক্ত গ্লুকোজের কারণে হয়ে থাকে। মানুষের শরীরে গ্লুকোজ আসে তার খাওয়া খাবার ও পান করা পানীয়ের কার্বহাইড্রেট থেকে। এই গ্লুকোজ (শর্করা) রক্তের মাধ্যমে প্রবাহিত হয়ে শরীরের কোষ দ্বারা শোষিত হয় বা প্রবেশ করে। আর কোষে এই গ্লুকোজ প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে ইনসুলিন। যা কোষ ও রক্তের গ্লুকোজের মধ্যে একটি চাবি হিসেবে কাজ করে। কিন্তু এই ইনসুলিন যখন শরীরে পর্যাপ্ত পরিমানে তৈরি হয়না বা কোন কারণে তা গ্লুকোজ প্রবেশে জন্য সঠিকভাবে সাড়া দেয়না তখন শরীরের এই অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলে। এমতাবস্থায় শরীরে শর্করার বা গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়। একে উচ্চ রক্তে শর্করা (হাইপারগ্লাইসেমিয়া) বলা হয়। যদি সময়ের সাথে এটি আরো অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে তাহলে এটি শরীরের অনেক সিস্টেমের, বিশেষ করে স্নায়ু এবং রক্তনালীগুলিকে গুরুতর ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়। ফলস্বরূপ হৃদরোগ, স্নায়ুর ক্ষতি এবং চোখের সমস্যা স্পষ্ট হয়।
ডায়াবেটিস (Diabetes) কেন হয়?
উপরের লিখনি থেকে স্পষ্ট যে শরীরে রক্তপ্রবাহে মাত্রাতিরিক্ত গ্লুকোজের উপস্থিতেই হলো ডায়াবেটিস। আর এই ডায়াবেটিস হওয়ার পেছনে কতগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে তা হলো।
১. ইনসুলিনের রেজিস্ট্যান্স বা বাঁধা : ইনসুলিনের রেজিস্ট্যান্স হলো যখন শরীরের বিভিন্ন স্থানের পেশী, চর্বি এবং লিভারের কোষগুলি ইনসুলিনের প্রয়োজনে সাড়া দেয়না। এটি ঘটে থাকে শরীরের স্থূলতা, প্রয়োজনীয় শারীরিক কার্যকলাপের অভাব, খাদ্যাভ্যাস, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, জেনেটিক্স ও ইনসুলিন প্রতিরোধের বিভিন্ন মাত্রায় ঔষধ সেবনে।
২. হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: বিভিন্ন কেসে দেখে গেছে গর্ভাবস্থায়, প্লাসেন্টা হরমোন নিঃসরণের ফলে শরীরে ইনসুলিনে প্রতিরোধ হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস দেখা দেয় কারণ এসম শরীর প্রয়োজন পরিমানে ইনসুলিন তৈরি করতে পারেনা। আবার অ্যাক্রোমেগালি এবং কুশিং সিনড্রোম হলে প্লাসেন্টা হরমোন নিঃসরণের ফলেও ডায়াবেটিস হয়ে থাকে।
৩. অভ্যন্তরীন অগ্ন্যাশয়ের ক্ষতি : যদি অস্ত্রোপচার, দুর্ঘটনা বা শরীরের অভ্যন্তরীন কোন সমস্যার কারণে ইনসুলিন তৈরির ক্ষমতা হারায় বা কমে যায় তখন এর প্রভাবে রক্তে গ্লুকোজের পরিমান বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হয়।
ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ ও উপসর্গ (Early Signs and Symptoms of Diabetes) কি কি?
ডায়াবেটিসের ধরণের উপর ভিত্তি করে এর আলাদা আলাদা লক্ষণ হতে পারে তবে ডায়াবেটিস হলে তা বুঝার জন্য কিছু প্রাথমিক লক্ষণ রয়েছে। নিচে লক্ষণগুলো দেয়া হলো।
১) খুব পিপাসা লাগা
২) স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
৩) দৃষ্টি
৪) অল্প কাজেই ক্লান্ত লাগা
৫) অনিচ্ছাকৃতভাবে ওজন হারানো
ডায়াবেটিসের ধরণ ও উপসর্গ কি কি?
ডায়বিটিসের অনেকগুলো ধরণ রয়েছে যার মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত ও বেশি আক্রান্ত হয় ৪ ধরণের। এগুলো হলো:
i) টাইপ 1 ডায়াবেটিস (Type 1 Diabetes)
ii) টাইপ 2 ডায়াবেটিস (Type 2 Diabetes)
iii) প্রিডায়াবেটিস (Prediabetes)
iv) গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes)
টাইপ 1 ডায়াবেটিস (Type 1 Diabetes) কী?
টাইপ 1 ডায়াবেটিস (Type 1 Diabetes) কে অটোইমিউনও বলা হয়। এই অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত হলে আপনার শরীরের ইমিউন-সিস্টেম এক অজানা কারণে অটোমেটিক অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলিকে আক্রমণ করে এবং
তাদেররকে ধ্বংস করে। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ১০% এই ধরণের শিকার হয়ে থাকেন। এই দশ শতাংশের মধ্যে শিশু ও অল্প বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি বেশি দেখা যায়। তবে যেকোন বয়সে বিকশিত হতে পারে।
টাইপ 1 ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলো (The symptoms of type 1 diabetes) কি কি?
তীব্র তৃষ্ণা, অতিরিক্ত প্রস্রাবের প্রবণতা, দ্রুত ওজন হ্রাস, প্রচণ্ড ক্ষুধা, ঝাপসা দৃষ্টি, চুলকানি, বমি বমি ভাব, অস্বাভাবিক বিরক্তি ও অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি।
টাইপ 2 ডায়াবেটিস (Type 2 Diabetes) কী?
ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ৯০% টাইপ 2 তে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এটি ডায়াবেটিসের সবচেয়ে সাধারণ রুপ। প্রাপ্তবয়ষ্করা এতে আক্রান্ত হওয়ায় একে প্রাপ্তবয়স্ক সূচক (Adult-Onset) ডায়াবেটিসও বলা হয়। মানবদেহে যখন পর্যাপ্ত পরিমানে ইনসুলিন তৈরি হয়না অথবা শরীরের কোষগুলোতে গ্লুকোজ প্রবেশের জন্য অজানা কারণে কোষগুলো ইনসুলিনের সাথে রিয়েক্ট করেনা তখন একে টাইপ 2 ডায়াবেটিস ধরা হয়। এটি সাধারণত স্থুলাকার বা ব্যায়াম ও কর্মবীমূখ ব্যাক্তিদের হয়ে থাকে।
টাইপ 2 ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলো (The symptoms of type 2 diabetes) কি কি?
টাইপ 2 এর লক্ষণগুলো টাইপ 1 এর মতোই তবে এর লক্ষণগুলো দ্রুত স্পষ্ট হয়না। আস্তে আস্তে এদের বিস্তার ও লক্ষণ স্পষ্ট হয়। যেমন: হাতে এবং পায়ে ঝিনঝিন, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, ধীরে গতিতে ক্ষতস্থান নিরাময় , অপ্রীতিকর গন্ধের অনুভূতি, ঝাপসা দৃষ্টি, মূত্রনালীতে সংক্রমণ, ঘনঘন প্রস্রাব ইত্যাদি।
প্রিডায়াবেটিস (Prediabetes) কী?
প্রিডায়াবেটিস (Prediabetes) হলো টাইপ 2 এর পূর্বের স্টেজ। এই ধরণে মানুষের রক্তে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গ্লুকোজ প্রবাহিত হয়। এবং আস্তে আস্তে লক্ষণ টাইপ 2 এর দিকে যেতে থাকে। ফলে শুরুর দিকে এটি নির্ণয় করা কঠিন।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes) কী?
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes) হলো গর্ভকালীন অবস্থায় হরমোনের কারণে কিছু মহিলার মধ্যে বিকাশ ঘটে এবং সাধারণত গর্ভাবস্থার পরে চলে যায়। তবে যদি কারো গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে পরবর্তী জীবনে তার টাইপ 2 ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার (Diabetes incidence rate) কেমন?
এক সমিক্ষায় দেখা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জনসংখ্যার ১১% ই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত যা সংখ্যায় দাড়ায় প্রায় ৩৭.৩ মিলিয়ন। এর মধ্যে ৯০%-৯৫ শতাংশই টাইপ 2 তে আক্রান্ত। বাংলাদেশে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। তবে উদ্বেগের কারণ হলো আমাদের দেশের শতকরা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষ জানেই না তারা এ রোগটিতে আক্রান্ত। ফলে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এই রোগ প্রতিরোধে এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে ২০৪৫ সালে দেশে রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।
ডায়াবেটিস পরিক্ষার ধরণ (Types of Diabetes test) কি কি?
ডায়াবেটিস পরিক্ষায় মূলত রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। আর এই পরিক্ষা ৩ ধরণের হয়ে থাকে।
i) Fasting blood glucose test
ii) Random blood glucose test
iii) A1c test
Fasting blood glucose test কী?
এই পরিক্ষাটি করার পূর্বে খাবার খাওয়ার আধা-ঘন্টা পূর্বে থেকে পানি ছাড়া অন্যকিছু খাওয়া নিষেধ। যাতে করে এটি রক্তের আসল গ্লুকোজের পরিমাণকে প্রভাবিত করতে না পারে।
Random blood glucose test কী?
এ পরিক্ষা যেকোন সময় করা যায়। পূর্বে কোন প্রকার উপোস বা নিয়মের প্রয়োজন হয়না।
A1c (Hemoglobin A1C) test কী?
এই পরীক্ষাটিকে HbA1C বা গ্লাইকেটেড হিমোগ্লোবিন পরীক্ষাও বলা হয়। A1c পরিক্ষার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির দুই থেকে তিন মাসের গড় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা সম্পর্কে জানা যায়। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস পরীক্ষায় এটি বেশি ব্যবহৃত হয়।
ডায়াবেটিস রোগী যে সকল খাবার খাবেন না
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যাক্তির কখনই শরীরের প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাওয়া চলবে না। এবং ডাক্তার/ পুষ্টিবিদদের দেয় খাবার চার্ট অনুসারে খাবার খেতে হবে।
এছাড়া সর্বদা যেসকল খাবার এড়িয়ে যেতে হবে তা হলো :
১. কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার :
সাদা রুটি ও পাস্তা: সাদা রুটি, সাদা পাস্তা, পিঠা
সাদা ভাত: সাধারণ ভাত, চিকন চালের ভাত
মিষ্টান্ন: কেক, পেস্ট্রি, কুকি
২. মিষ্টি ও পানীয় :
মিষ্টি পানীয়: সোডা, ফলের রস, এনার্জি ড্রিংক
মিষ্টান্ন: আইসক্রিম, চকলেট, স্যান্ডউইচ কুকি
৩. ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার :
ফাস্ট ফুড: ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, হ্যামবার্গার, পিজ্জা
প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার: চিপস, স্ন্যাকস, প্যাকেটজাত খাবার
৪. দুগ্ধজাত খাবার :
চর্বি সমৃদ্ধ দুগ্ধজাত: পূর্ণ চর্বি দুধ, ক্রিম, চর্বি যুক্ত পনির
৫. প্রক্রিয়াজাত ও সংরক্ষিত খাবার:
প্রক্রিয়াজাতকৃত মাংস: সালামি, সসেজ, হট ডগ ইত্যাদি
কনসার্ভড খাবার: কনসার্ভড সবজি, সস
৬. অ্যালকোহল:
যেসকল পানীয়তে অ্যালকোহলের উপস্থিতি রয়েছে এমন পানীয়।
ডায়াবেটিস রোগীদের যে যে খাবার খাওয়া উচিত
১. সবজি: পালং শাক, ব্রোকলি ইত্যাদি। অর্থ্যৎ ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ শাক-সবজি যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এদের মধ্যে ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।
২. ফল: ফলের মধ্যে স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরি, আপেল, নাশপাতি ইত্যাদি ফাইবারযুক্ত ফল খাওয়া। এগুলো রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। মিষ্টি ফলের মধ্যে আম ও অন্যান্য ফল সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত কারণ এদের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলকভাবে বেশি অন্য ফলের চেয়ে বেশি।
৩. গোটা শস্য জাতীয় খাবার: গোটা শস্য দ্বারা তৈরি ব্রাউন ব্রেড, টস ইত্যাদি ফাইবার সমৃদ্ধ যা হজমের জন্য সহায়ক। আবার ব্রাউন রাইস, কুইনোয়া ইত্যাদি সাধারণ শস্যের তুলনায় ভালো পুষ্টি দেয়।
৪. প্রোটিনযুক্ত খাবার: খাদ্য তালিকার ওমেগা-৩ ফ্যাট সমৃদ্ধ মাছ খাওয়া। কারণ এগুলো হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। পাশাপাশি কম খরচের মধ্যে ডাল, চিয়া বীজ, তিল এগুলোও প্রোটিনের ভালো উৎস।
৫. পানি পান: হাইড্রেশনের জন্য পর্যাপ্ত জল পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি দেহের সব কার্যকলাপকে সুস্থ রাখতে অনন্য ভূমিকা পালন করে।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায় কী?
জিনগত বৈশিষ্ট, জীবনধারা ও বয়স এই তিনট বিষয়ের উপর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া প্রায় পুরোটাই নির্ভর করে। বাকী থাকে অস্ত্রোপচার ও অন্যান্য কিছু ফ্যাক্টর। ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের মধ্যে সিংহভাগই হলো বয়স্ক বা স্থূলদেহ বিশিষ্ট। এরা সাধারণত টাইপ 2 তে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই প্রিডায়াবেটিস স্টেজের পূর্বে থেকেই যদি কেউ জীবনধারায় খাদ্যাভাস, ব্যায়াম, মানসিক চাপ ও স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থেকে নিয়মিত কাজে বা ব্যায়ামে থাকে তাহলে ডায়াবেটিসের ঝুকি অনেকটাই কমে যায়।
তবে এগুলোর পরেও যদি পারিবারিকভাবে কোন সদস্যর ডায়াবেটিস থেকে থাকে তাহলে জিনগত বৈশিষ্টর কারণে ডায়াবেটিস হওয়ার শঙ্কা অনেকটাই বেড়ে যায়। তবে এক্ষেত্রেও হাল ছাড়লে চলবেনা। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্য মনিটর করতে হবে।
ডায়াবেটিস প্রতিকারের উপায় কী?
একবার ডায়াবেটিস ধরা পরলে এর বোঝা প্রায় সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হয়। একদিকে যেমন দীর্ঘমেয়াদী ডায়াবেটিস জটিলতা নিয়ে ভুগতে হয়। অন্যদিকে নিয়মিত নিয়ম না মানলে জীবনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। তবে নিয়মিত স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের জন্য এটি আস্তে আস্তে সহজ হয়ে যায়। আর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নিয়মিত স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের দৈনিক রুটিন হলো :
১. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা: যেমন ফল ও সবজি, গোটা শস্য ও স্বাস্থ্যকর প্রোটিন খাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেয়া ও চিনিযুক্ত খাবার বাদ দেয়।
২. নিয়মিত ব্যায়াম করা: সপ্তাহে অন্তত আড়াই ঘন্টা ব্যায়ামের অভ্যাস রাখা ও নিজেকে শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন কাজে ব্যাস্ত রাখা।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ করা: খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে উচ্চতা অনুসারে বিএমআই নিয়ন্ত্রনে রাখতে হবে।
৪. স্ট্রেস ব্যবস্থাপনা: স্ট্রেস হলে ধূমপান ও মদ্যপানে জড়ানো যাবেনা বরং শিথিলকরণ কৌশল অবলম্বন করতে হবে। পাশাপাশি দৈনিক রক্তের শর্করা পরিক্ষা করে সে অনুযায়ী লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হবে।