হন্ডুরাসের মাটিতে প্রাক-মৌসুমের একটি ম্যাচ খেলতে এসে দারুণ নাটকীয় অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলেন লিওনেল মেসি ও তাঁর ইন্টার মায়ামি সতীর্থরা। সি ডি অলিম্পিয়ার বিপক্ষে স্থানীয় সময় রাত ৮টায় মাঠে নামার কথা থাকলেও, খেলা শুরু হওয়ার দেড় ঘণ্টা আগে উত্তর হন্ডুরাসে আঘাত হানে ৭.৬ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস (USGS) জানায়, ওই অঞ্চলে গত চার বছরে এত শক্তিশালী কম্পন আর দেখা যায়নি।
ভূমিকম্প এবং সুনামি সতর্কতা
ভূমিকম্পের পরপরই স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সুনামির আশঙ্কা প্রকাশ করে। মার্কিন সুনামি সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের প্রভাবে প্রায় দুই ঘণ্টা পর সুনামি আসতে পারে। যদিও শেষ পর্যন্ত বড় কোনো বিপর্যয়ের খবর পাওয়া যায়নি, ফলে ম্যাচ বাতিল করার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি।
মাঠে মেসির দুর্দান্ত পারফরম্যান্স
অলিম্পিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় হন্ডুরাসের চেলাটো ইউক্লেস ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে, যা ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে প্রায় ৪০০ মাইল দূরে অবস্থিত। স্টেডিয়ামে সরাসরি ভূমিকম্পের প্রভাব না পড়লেও, মেসি ও তাঁর দলমেটরা নিজেদের আক্রমণাত্মক ফুটবল দিয়ে পুরো মাঠ কাঁপিয়ে দেন। ম্যাচের ২৭তম মিনিটে অসাধারণ সহযোগিতায় নিজের প্রথম গোলটি করেন মেসি। সঙ্গী তারকা লুইস সুয়ারেজ বল পেয়েও শট না নিয়ে মেসিকে সুযোগ করে দেন, আর সহজেই এগিয়ে যায় ইন্টার মায়ামি।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে মেসি আরও দু’টি গোলের পেছনে সহায়তা করেন। ৪৪ মিনিটে ফেদেরিকো রোদানদো ও অতিরিক্ত সময়ে নোয়াহ অ্যালেনকে দিয়ে গোল করান তিনি। বিরতির পর ৫৮ মিনিটে নিজে গোল করেন সুয়ারেজ; আর ম্যাচের ৭৯তম মিনিটে রায়ান সেইলরের গোল ইন্টার মায়ামিকে ৫–০ ব্যবধানে বড় জয় এনে দেয়। এই জয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রাক-মৌসুম পর্ব শেষ করে ইন্টার মায়ামি। মূল মেজর লিগ সকার (এমএলএস) মৌসুম শুরুর আগে, ১৪ ফেব্রুয়ারি অরল্যান্ডো সিটির বিপক্ষে প্রাক-মৌসুমের আরেকটি ম্যাচ খেলবে দলটি। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি স্পোর্টিং কানসাস সিটির মুখোমুখি হয়ে শুরু করবে কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে তাদের অভিযাত্রা।
বিপর্যয়ের ভয়াল সম্ভাবনা সত্ত্বেও, হন্ডুরাসে অনুষ্ঠিত এই প্রাক-মৌসুম ম্যাচে মেসি-সুয়ারেজ জুটির দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আর বড় জয়ই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে। ভূমিকম্পের সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও মাঠে গড়ানো ম্যাচে ইন্টার মায়ামি তাদের চিরচেনা আক্রমণাত্মক রূপে ফিরে যায়, যা নতুন মৌসুমের জন্য দলটির আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে তুলবে।