চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ইতিহাসে ইংল্যান্ড একটি নতুন রেকর্ড গড়েছিল, কিন্তু সেই রেকর্ডটির বয়স দেড় ঘণ্টা হয়নি, অস্ট্রেলিয়া সেটি ভেঙে দিয়ে প্রথম ম্যাচে জয়ের স্বাদ পেল। ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে ৩৫১ রান করেছিল, যা ছিল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ রান। তবে অস্ট্রেলিয়া সেই রান মাত্র ৪৭.৩ ওভারে ৫ উইকেটে টপকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ল।
ইংল্যান্ডের রেকর্ড ও ডাকেটের ঝোড়ো ব্যাটিং
ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান বেন ডাকেট তার দুর্দান্ত ১৬৫ রানের ইনিংসের মাধ্যমে ইংল্যান্ডের ইতিহাসে একটি নতুন রেকর্ড গড়েন। ১৪৩ বলে ১৭ চার এবং ৩ ছক্কায় ১৬৫ রান করে তিনি দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। তার ইনিংস ছিল অসাধারণ, যা দলের জন্য শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করেছিল। তবে, ইংল্যান্ডের শুরুটা সহজ ছিল না। তারা প্রথম ৪৩ রানের মধ্যেই ফিল সল্ট এবং জেমি স্মিথকে হারিয়ে ফেলেছিল। এই পরিস্থিতিতে ডাকেটের সাথে তৃতীয় উইকেটের জন্য জো রুটের (৬৮ রান) ১৫৫ বলের ১৫৮ রানের পার্টনারশিপ ইংল্যান্ডকে স্বাভাবিকভাবে ম্যাচে ফেরাতে সাহায্য করে। যদিও রুটকে আউট হওয়ার পর ইংল্যান্ড কিছুটা বিপদে পড়েছিল, তবে ডাকেটের দৃঢ় ইনিংস দলের লক্ষ্য ঠিক রেখে যাত্রা চালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে।
ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ও আর্চারের ঝড়
ডাকেটের আউটের পর ইংল্যান্ডের ইনিংসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। যদিও হ্যারি ব্রুক, জস বাটলার, লিয়াম লিভিংস্টোনরা খুব বেশি রান করতে পারেননি, তবে শেষদিকে জফরা আর্চারের ঝোড়ো ব্যাটিং ইংল্যান্ডকে তাদের লক্ষ্য পেতে সহায়তা করেছে। আর্চার ১০ বলে ২১ রান করেছেন, যাতে ছিল ২ চার ও ১ ছক্কা। ইংল্যান্ড শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৩৫১ রান করে ৮ উইকেট হারিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন বেন ডোয়ারশিস (৩/৬৬)।
অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ
৩৫১ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো ছিল না। দলের দুই বড় তারকা ট্রাভিস হেড ও স্টিভেন স্মিথ খুব দ্রুত ফিরে যান। তবে, ম্যাথু শর্ট (৬৩) এবং মারনাস লাবুশেন (৪৭) দলের হাল ধরেন। এই দুই ব্যাটসম্যানের ৯১ বলের ৯৫ রানের জুটি দলকে কিছুটা আশা দিয়েছিল। কিন্তু ইংল্যান্ডের বোলাররা দ্রুত তাদের আউট করে দেয়।
এরপর মাঠে আসেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান জশ ইংলিস, যিনি ৮৬ বলের ১২০ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসের সাহায্যে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচটি জয়ের পথে এগিয়ে যায়। ইংলিসের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের ফলে অস্ট্রেলিয়া শেষ পর্যন্ত ৪৭.৩ ওভারে ৩৫৬/৫ রান করে, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে।
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত স্কোর
- ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৫১/৮ (ডাকেট ১৬৫, রুট ৬৮; ডোয়ারশিস ৩/৬৬, লাবুশেন ২/৪১, জাম্পা ২/৬৪)
- অস্ট্রেলিয়া: ৪৭.৩ ওভারে ৩৫৬/৫ (ইংলিস ১২০*, ক্যারি ৬৯, শর্ট ৬৩, লাবুশেন ৪৭; রশিদ ১/৪৩, লিভিংস্টোন ১/৪৭)
ম্যাচের ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জশ ইংলিস
রেকর্ড ভাঙার পর অস্ট্রেলিয়ার জয়ের স্বাদ
এই ম্যাচে দুই দলের রেকর্ড ভাঙার ঘটনা ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ইংল্যান্ডের দলীয় সর্বোচ্চ রান আর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড ভেঙে অস্ট্রেলিয়া নিশ্চিত করে যে, তারা বড় রান তাড়া করতে সক্ষম। জশ ইংলিসের ঝোড়ো ইনিংস ও তার দলকে ম্যাচ জেতানোর প্রচেষ্টা অস্ট্রেলিয়ার এই জয়কে স্মরণীয় করে রেখেছে।