বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি)-এর নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জনপ্রিয় চলচ্চিত্র নির্মাতা মাসুমা রহমান তানি। গত বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তার নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, মাসুমা রহমান তানিকে তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক এ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং তাকে কোনো সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগ করতে হবে।
প্রজ্ঞাপন প্রকাশের পরেই সামাজিক মাধ্যমে কিছু বিতর্ক উত্থাপিত হয়েছে। কয়েকজন সামাজিক মাধ্যমে মাসুমা রহমান তানির বিরুদ্ধে যুবলীগের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগ তুলেছে এবং তাকে নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংসদ (জাসাস) ও কিছু অনলাইন পোর্টালেও এই দাবি করা হয়। তবে, মাসুমা রহমান তানি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, “এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। সময় সব প্রমাণ দেবে।”
এর আগে, ৮ ফেব্রুয়ারি একটি কল রেকর্ডে তানি এই দাবি করেন যে, কিছু কুচক্রীমহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, "যদি কেউ যুবলীগের নেত্রী হিসেবে আমার প্রমাণ দেখাতে পারে, আমি তৎক্ষণাৎ পদত্যাগ করব। আমি কখনও আওয়ামী লীগের আয়োজনে অংশগ্রহণ করিনি এবং আমার পরিবারও আওয়ামী বিরোধী রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত।"
এফডিসি এমডির পদে তানির নিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানায়, এফডিসির এমডি নিয়োগে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করেছে এবং তাদের প্রতিবেদনে তানির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। তানির গোয়েন্দা প্রতিবেদন ছিল পজিটিভ, তাই তাকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এফডিসি এবং চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের জন্য বর্তমান সরকার কিছু মেগা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের চলচ্চিত্র খাতকে আরও উন্নত করা হবে। সাঈদুর রহমান সাঈদ, যিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জুরি বোর্ডের সদস্য, তিনি বলেছেন, "চলচ্চিত্রের এই সংকটকালে আমাদের দরকার ছিল একজন স্মার্ট তরুণ, যিনি তার আধুনিক চিন্তা-চেতনা দিয়ে চলচ্চিত্রের পুরোনো জৌলুস ফিরিয়ে আনবেন।"
মাসুমা রহমান তানি ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এফডিসিতে অফিস শুরু করবেন। তার শিক্ষা জীবন এবং পরিবারের রাজনৈতিক পটভূমি যাচাই করার পর জানা গেছে, তিনি বহু আগে থেকেই একটি বুদ্ধিদীপ্ত, আধুনিক এবং সময়োপযোগী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। চলচ্চিত্র শিল্পের বর্তমান সংকট কাটাতে এবং আধুনিকীকরণে তার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে আশা করা হচ্ছে।